রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৮ পূর্বাহ্ন

সাংবাদিক লাঞ্ছিত করায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাময়িক বহিষ্কার 

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল হোসেনকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে মারধর ও লাঞ্ছিত করায় ইকবাল হোসেনকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সাংবাদিক মিনহাজ আমানকে প্রকাশ্যে আপনি আপনার দলবল নিয়ে শারীরিকভাবে আঘাত এবং লাঞ্ছিত করেছেন- যা সম্পূর্ণরূপে দলের শৃঙ্খলা পরিপন্থী ঘৃণ্য অপরাধ। এ ধরনের গুরুতর কর্মকাণ্ডের জন্য আপনাকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।’

এর আগে শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকার গুলিস্তান থেকে নারায়ণগঞ্জগামী আসিয়ান পরিবহনের একটি বাসে চালকের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় ইকবালের। পরবর্তীতে বাসটি নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকায় এলে ইকবালের অনুসারীরা বাস চালককে মারধর করে বাসটিতে ভাঙচুর চালায়। এ সময় সাংবাদিক মিনহাজ আমান বাস ভাঙার প্রতিবাদ জানালে তাকেও লাঞ্ছিত করে ইকবালের অনুসারীরা।

ঘটনার পর পর সাংবাদিক মিনহাজ আমান নিজের ফেসবুক আইডিতে এ ঘটনার একটি ছবি পোস্ট দিয়ে বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তার অভিযোগ, চালককে মারধর ও বাস ভাঙচুরের প্রতিবাদ করায় বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনের লোকজন তাকেও লাঞ্ছিত এবং হেনস্তা করেছে।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে সাংবাদিক মিনহাজ আমান লিখেন, ‘ড্রাইভারের সঙ্গে তর্কের জেরে পিটিয়ে গাড়ি ভেঙে ভিজিটিং কার্ড ধরায় দিয়ে গেছে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন। আসল নেতা বলতেই হয়। প্রতিবাদ করতে যেয়ে আমার অবস্থা নিয়ে বলতে চাই না। লজ্জায় মাথা হেট আমার। দুই হাজার শহীদের দেশ এটাই।’

এদিকে ইকবালের বহিষ্কারের খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা দীর্ঘদিনের ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর ইকবাল মূর্তিমান আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।  তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। ইকবাল এবং তার ভগ্নিপতি ও স্বজনদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে এলাকাবাসী।
তারা আরও অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ইকবাল হোসেন ও তার স্বজনরা ওই ওয়ার্ডে বিভিন্ন সেক্টরে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী, ভূমি দস্যুতা, দখল বাণিজ্যসহ একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে। এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে ইকবাল হোসেন এলাকায় বেশ কয়েকটি কিশোর গ্যাং থেকে শুরু করে  সন্ত্রাসী বহিনী গড়ে তোলে। এসব নিয়ে এলাকায় একাধিক হামলার ঘটনা ঘটলেও ইকবাল ও তার লোকদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে কেউ কোনো সাহস পায়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ আওয়ামী লীগের শাসনামলেও ইকবাল সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজি ইয়াছিন মিয়ার ছত্রছায়ায় এসব অনৈতিক ও অবৈধ কর্মকাণ্ডে মেতেছিল।

সংবাদটি শেয়ার করুন :

© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত